বছর হলেই পার,
দুটি করে চ্যানেল গজায়
ঠেকায় সাধ্য কার?
নানা রকম অঙ্গীকার আর
নতুন ্লোগান দিয়ে,
ছ’মাস দেখি টেস্টে থাকে
ওল্ড প্রোগ্রাম নিয়ে।
নতুন কী কী থাকবে এতে
চলছে যখন থিম,
বাগিয়ে আনার চেষ্টা তখন
অন্য টিভির টিম।
ডাবল বেতন অফারে কেউ
যোগ দেয় সেই দলে
পুরোটা টিম তৈরি হতে
অনেক প্রসেস চলে।
জয়েন করেও ব্যাক করে কেউ
এমন লোকও আছে,
নতুন চ্যানেল না দাঁড়ালে
ঠকতে হবে পাছে।
নতুন চ্যানেল, গবেষণার
বাদ পড়ে না কিছু,
চামচা ঘোরে ডজনখানেক
ডিরেকটরের পিছু।
টিভির লোগো কয়েকটা হয়
সিলেক্ট কি আর সোজা?
কোনটা স্ক্রিনে লাগবে ভালো
যায় না আগেই বোঝা!
লোগোর পিছে লাগবে টাকা
আপত্তি নেই ঢালো,
দুই-তিনবার করলে বদল
হতেও পারে ভালো।
লোগোর সমস্যাটা যখন
যায় চ্যানেলের মিটে,
ডেকোরেশন ফাট্টাফাটি
কালার করো ইটে।
দুই-তিনবার যায় পিছিয়ে
সম্প্রচারের ডেট,
এমপ্লয়িরা একটু হতাশ
হচ্ছে কেন লেট?
ঘটা করে বিশেষ দিনে
চ্যানেল হলে চালু,
নিউজ বিভাগ, ব্রডকাস্টের
গরম মাথার তালু।
প্রোগ্রাম পায় একটু রিলিফ
বাইরে থেকে কেনা,
নিজেদের আর কেনা প্রোগ্রাম
সহজে যায় চেনা।
শুরুর দিকে তারকা সব
মেকার যদিও আসে,
কিনতে গিয়ে সেই প্রোগ্রাম
অনেক চ্যানেল ফাঁসে।
সব প্রোগ্রাম তেমন করে
নজর কি আর কাড়ে?
হিট মেকারের ফ্লপ প্রোগ্রাম
দোষ চ্যানেলের ঘাড়ে।
রান্না এবং গানের ইভেন্ট
সব চ্যানেলেই আছে,
নাটক, ম্যাগাজিনের চেয়েও
প্রিয় কারও কাছে।
নানান রকম শোয়ের পরেও
টক শো থাকে মাস্ট,
শুদ্ধ ভাষায় হয় না নাটক
ওসব এখন পাস্ট।
খুইজ্যা দ্যাখো, খায়া ফালাও
চলতি ভাষার ড্রামা,
তরুণ সমাজ নিলেও মানতে
নারাজ খালু, মামা!
বাংলা ছবির কদর তবে
সব চ্যানেলেই রয়,
বাড়ির বুয়া এসব ছাড়া
কাজেই রাজি নয়!
গৃহিণীরাও দেখেন এসব
দুপুরবেলা শুয়ে-
পিচ্চি যেসব পাকনা, দেখে
মুখের খাবার থুয়ে।
ঘণ্টাতে ঘণ্টাতে নিউজ
দেখেন অনেক লোক,
লাইভ টেলিকাস্ট খাচ্ছে সবাই
বিষয় যেটাই হোক।
সেলুলার ফোন ডায়াল করেও
নিউজ যাবে জানা,
ফোনে ফোনেই রিপোর্টারের
জীবন প্রায়ই ফানা···।
বিজ্ঞাপনের বিরতিতে
দর্শক দেয় ঘুম,
চ্যানেলগুলোয় টক শো করার
পড়ছে এখন ধুম।
একই বিষয়, একই মানুষ
সব চ্যানেলেই থাকে,
বক্তার নেই একটু সময়
সব শোতে হায় ডাকে!
এসব অনুষ্ঠানেই নাকি
চ্যানেল ওঠে জমে,
কারও বাড়ে টিআরপি ফের
কারও আবার কমে।
সমালোচক চ্যানেলগুলোর
নিন্দা করুক, তবে-
তথ্য এখন ড্রয়িং রুমে
এটাও মানতে হবে।
ওবায়দুল গনি
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ১৬, ২০০৯
0 comments:
Post a Comment